সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন (সফল হতে পারছেন না)

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে একজন ফ্রিল্যান্সারের সফল হওয়া না হওয়া অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিং করছেন বা করতে চাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগেরই এই ফ্রিল্যান্সিং জগতের অনেক কিছু অজানা থাকে। যার দরুন অনেক ফ্রিল্যান্সার ফ্রিল্যান্সিং করতে এসে মাঝপথে হারিয়ে যায়। অনেকে হতাশ হয়ে যায় শুধুমাত্র সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন এর অভাবে।

সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন
সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন
বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্স বা মুক্ত পেশা অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করতো কিন্তু এখন ফ্রিল্যান্সিংকেই মূল পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। আবার অনেকে পড়ালেখার পাশাপাশি পুরোদমে ফ্রিল্যান্সিং করছে। ফ্রিল্যান্সিং করার সুবিধা অনেক।

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করে দেওয়া মোটামুটি সবার জন্যই সহজ। কিন্তু সত্যিকার অর্থে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম, নিষ্ঠা, সততা এবং প্রেরণা লাগে।

তাই বেশিরভাগ নতুন ফ্রিল্যান্সাররা কয়েক মাস পরে ঘরে বসে অনলাইন ইনকাম করার স্বপ্ন ছেড়ে দেয়। এবং এই কারণেই শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় কিছু ফ্রিল্যান্সাররা সফল হয় এবং আর্থিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতা লাভ করে।

সফল ফ্রিল্যান্সার কি বা আমরা কি বুঝি

অনেকেই মনে করে যে, যারা অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে দুই তিন বছর কাজ করছে, এবং মাসে ৫০০ থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করে তারা বুঝি সফল ফ্রিল্যান্সার। কিন্তু এটি একেবারেই ভুল ধারণা।

একজন ফ্রিল্যান্সার মাসে কত ইনকাম করে এটি কখনোই সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য অর্থ বহন করে না। বরং একজন ফ্রিল্যান্সারের কতটুকু তার নিজস্ব মার্কেট ভ্যালু বা চাহিদা তৈরি হয়েছে এর উপর নির্ভর করে ফ্রিল্যান্সারের সফলতা। কারণ শুধুমাত্র মার্কেটপ্লেস নির্ভরতা একজন ফ্রিল্যান্সারের জন্য যেকোনো মুহূর্তে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

কিভাবে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায়

সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য কিছু গুণাবলী রয়েছে। যদি কোন ফ্রিল্যান্সার এই গুণাবলীগুলো সঠিকভাবে মেনে চলতে পারে তবে এ পেশায় দ্রুত সফল এবং দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য প্রচুর অধ্যবসায়, ধৈর্য, প্রতিশ্রুতিশীল এবং যে সমস্ত বাধাগুলি আসে সেগুলো অতিক্রম করার জন্য অক্লান্ত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।

ফ্রিল্যান্সিং করার সময় অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এই সময় ভয় না পেয়ে বরং ঐ সমস্ত বাধাগুলোকে আত্মবিশ্বাসের সাথে মোকাবেলা করতে হবে।

চলুন দেখে নেয়া যাক সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য আমাদের কি কি গুণাবলী থাকা দরকার।

ক্লায়েন্টদের সাথে কমিউনিকেশনের দক্ষতা (Strong Communication Skills)

সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য ক্লায়েন্টের সাথে কমিউনিকেশনের দক্ষতা থাকা অতীব জরুরী। যে যত বেশি কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ করতে পারদর্শী হবে, ফ্রিল্যান্সিং জগতে সে ততো বেশি ক্লায়েন্ট হ্যান্ডেল করতে পারবে। এই কমিউনিকেশন অনেকভাবে হতে পারে, মেইলের মাধ্যমে, ভয়েস চ্যাট এর মাধ্যমে , ভিডিও কলের মাধ্যমে ইত্যাদি।

সবচেয়ে বেশি ইফেক্টিভ কমিউনিকেশন হল ভিডিও কলের মাধ্যমে ক্লায়েন্টকে হ্যান্ডেল করা। আপনার যদি ইংরেজির স্কিল ভালো থাকে, তাহলে ক্লায়েন্টকে অনেকভাবে কাজের বর্ণনা করতে পারবেন। ভিডিও কলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল কথা বলার সময় কনফিডেন্স শো-আপ করা যায়। এতে করে ক্লায়েন্ট বুঝতে পারে আপনি আপনার কাজে পারদর্শী এবং আপনাকে কাজ দেওয়ার ব্যাপারে মোটিভেট হয়।

তাই যদি ইংরেজিতে কথা বলার দুর্বলতা থেকে থাকে, তবে আজ থেকেই প্র্যাকটিস শুরু করে দিন। কেননা আজ না হয় কাল আপনাকে অবশ্যই ভিডিও কলের মুখোমুখি হতে হবে।

তাছাড়া টেক্সট মেসেজিং অথবা ই-মেইল এর মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আপনার শব্দ নির্বাচন এবং বাক্য গঠনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যাতে অল্প কথায় কিন্তু সুন্দর উপস্থাপনা দিয়ে আপনার কাজ বুঝিয়ে দিতে পারেন।

একজন সফল ফ্রিল্যান্সার দুঃসময়ের পরিকল্পনা করে PLAN-B তৈরি রাখে

জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে মানুষের সুসময় এবং দুঃসময় দুটোই থাকে। বুদ্ধিমানরা সব সময় দুঃসময়ের কথা চিন্তা করে পরিকল্পনা করে রাখে। এটিই হচ্ছে PLAN-B। অর্থাৎ মনে করুন আপনি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। আপনি নির্দিষ্ট একটি বা দুটি মার্কেটপ্লেসে নিয়মিত কাজ করছেন। এখন হয়তো কোনো কারণবশত মার্কেটপ্লেসের অ্যাকাউন্টগুলো আপনার ডিজেবল হয়ে গেল। তাহলে আপনি এতদিন যে একটি মার্কেটপ্লেসের  সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছিলেন এবং নিয়মিত অনলাইন ইনকাম করছিলেন, সেটি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল।

এমতাবস্থায় আপনি যদি আগে থেকেই PLAN-B সেট করে রাখতেন, তাহলে কিন্তু মার্কেটপ্লেসের অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলেও আপনার কোনো চিন্তা ছিল না।

অনলাইন জগতে একজন ব্যক্তির সবচেয়ে নিরাপদ ঠিকানা হচ্ছে একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট। অবশ্যই ওয়েবসাইটটির ডোমেইন ক্রয় কৃত হতে হবে। অনেকে ফ্রী ডোমেইন নিয়ে ওয়েবসাইট করে। এটি কখনোই প্রফেশনাল কাজ নয়। ফ্রি ডোমেইন সাধারনত প্র্যাকটিস এর কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়।

নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে এবং সেগুলোর সাথে আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার একাউন্টগুলোর সাথে কানেক্ট করে প্রতিনিয়ত প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আপনার ওয়েবসাইটেই কাজ নিয়ে আসার চেষ্টা করুন।

এছাড়া আপনার বর্তমান কাজের পাশাপাশি অন্য আরও কিছু কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে ফেলুন। এতে করে আপনার কাজের ক্ষেত্র বেড়ে যাবে। সফল ফ্রিল্যান্সারেরা কখনো একটি কাজের দক্ষতা নিয়ে বসে থাকেন না। তারা প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদের কাজের দক্ষতাকেও বাড়িয়ে নেয়।

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজস্ব মার্কেট ভ্যালু তৈরি করা বা নিজের ব্র্যান্ডিং করা

সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সেল্ফ বা নিজের ব্র্যান্ডিং করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের দেশের বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার এই কাজটি শুরু করে অনেক দেরিতে। আপনি যখন ফ্রিল্যান্সিংয়ে নিজের ক্যারিয়ার করতে চাচ্ছেন। প্রথম থেকেই আপনার নিজের ব্র্যান্ডিং এর কাজ স্টার্ট করে দিতে হবে।

অর্থাৎ যতগুলো সোশ্যাল মিডিয়া আছে সবগুলোতেই আপনার নাম দিয়ে প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। এবং এই প্রোফাইল গুলোতে আপনি শুধু আপনার কাজ রিলেটেড, হতে পারে কোন কাজ অথবা কাজে রিলেটেড কোন চিন্তাভাবনা শো করবেন। এবং চেষ্টা করবেন এই আইডিগুলোতে আপনার কাজের সাথে রিলেটেড সম্ভাব্য টার্গেটের এলাকার বা দেশের মানুষদেরকে লিংক করতে। নিজেকে প্রচার প্রচারণা করতে সোশ্যাল মিডিয়ার চেয়ে বড় কোন হাতিয়ার নেই।

প্রথমদিকে এখান থেকে আপনার তেমন কোন বেনিফিট না হলেও, যত আপনার ফ্রিল্যান্সিং এর বয়স বাড়বে এবং আপনার লিংক যত বাড়বে তত আপনার নিজের ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরী হবে। প্রতিনিয়ত এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে আপনার নিজের কাজ সম্বন্ধে পোস্ট করবেন। কোন কাজ করে থাকলে সেগুলো সব পোস্ট করবেন।

একজন সফল ফ্রিল্যান্সারের সবচেয়ে বড় গুণ পেশাদারিত্ব (Professionalism)

পেশাদার হওয়ার অর্থ হল আপনি আপনার ক্লায়েন্টদেরকে বোঝানো, যে আপনি কী করতে পারেন এবং কত সময়ের মধ্যে আপনি এটি সম্পন্ন করতে পারেন। এবং সর্বোপরি আপনি আপনার কাজে কতোটুকু দায়িত্বশীল। পেশাদাররা অবশ্যই তাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখেন, কোন প্রকল্প নিলে সেটি বাস্তবায়নের সময় তারা যতই বাধার সম্মুখীন হোন না কেন, তারা নৈতিক, সময়মত যোগাযোগ করে এবং তাদের ক্লায়েন্টদের সাথে প্রাথমিক ব্যবস্থাগুলির ক্ষেত্রে যথেষ্ট সর্তকতা অবলম্বন করে।

একজন পেশাদার ফ্রিল্যান্সার কখনো ফ্রী (Free) কথাটি উল্লেখ করেন না। কেউ যখন কোন কাজ ফ্রি দেওয়ার কথা বলে তখন স্পষ্টতই বোঝা যায় সেখানে কোন কিন্তু আছে। তাই প্রফেশনালরা সব সময় ফ্রী (Free) শব্দটি এড়িয়ে যায় এবং এই ক্ষেত্রে তারা একটু টেকনিকাল পন্থা অবলম্বন করে।

তাছাড়া প্রাইসিং বা মূল্য নির্ধারণ, সময়ানুবর্তিতা, নম্রতা এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে।তাই একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য পেশাদারিত্ব বা (Professionalism) থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা (Time Management Skills)

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার জন্য একজন ফ্রিল্যান্সারকে সফলভাবে সময় পরিচালনা করতে হবে। এই কারণেই আপনার সমস্ত দৈনন্দিন কার্যক্রমের সময়সূচীর তালিকা করতে হবে। আপনি প্রতিদিন কত ঘণ্টা কাজ করতে পারেন, দিনে কতটি কাজ সম্পন্ন করতে পারেন এবং কোন ধরনের কাজ পরিচালনা করতে পারেন তা পরিষ্কারভাবে জানতে হবে।

যদি সঠিক সময়ের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যায় তাহলে ক্লায়েন্ট আপনার দ্বারা কখনো হতাশ হবে না। এবং এতে করে আপনার প্রতি ক্লায়েন্টের নির্ভরশীলতা বেড়ে যাবে। আর যখনি আপনি ক্লায়েন্টের নির্ভরশীলতা অর্জন করতে পারেবেন তখন দেখবেন, ক্লায়েন্ট আপনার উপর কথা বলবে না।

সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য চাই কর্মঠতা / অধ্যবসায় (Persistence)

জীবনের অন্য যেকোনো কাজের ক্ষেত্রের প্রচেষ্টার মতোই, ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য স্থির হৃদয়ের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে শুরুতে যখন আপনি অনেক কাজে প্রত্যাখ্যানের  মুখোমুখি হবেন এবং কাজ পাওয়া খুব কঠিন হবে।

একমাত্র জিনিস যা আপনাকে এখানে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে তা হল আপনার দক্ষতা, ধৈর্য, একাগ্রতা এবং ক্ষমতার উপর আপনার বিশ্বাস। ফ্রিল্যান্সিং এ নিজেকে সফল করে তোলা কখনই সহজ যাত্রা নয়।

কিন্তু একবার আপনি আপনার লক্ষ্যে অটল থাকুন এবং সঠিক উপায়ে চেষ্টা করতে থাকুন, আপনি অবশ্যই সুড়ঙ্গের শেষে আলো দেখতে পাবেন।

দৃঢ়তা এবং দায়িত্বশীলতা (Determination and Responsibility)

এগুলি এমন বৈশিষ্ট্য যা একজন ফ্রিল্যান্সার কখনও এড়িয়ে যেতে পারে না। কোন কাজ বা প্রজেক্টসমূহ সম্পন্ন করার ক্ষমতা, ক্লায়েন্টদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করা, এবং একটি প্রকল্পের সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য সংকল্প এবং নিখুঁত পরিকল্পনার প্রয়োজন। আপনি আপনার প্রতিটি কাজের জন্য দায়ী থাকবেন।

এই দক্ষতা গুলো অবশ্য একদিনে আসবেনা। তবে আপনি যদি আপনার কাজের প্রতি দায়িত্বশীল থাকেন তবে আপনাকে বলে দিতে হবে না।

এমনও হতে পারে আপনি কোন কাজ করতে গিয়ে আটকে গিয়েছেন, কিন্তু এমতাবস্থায় কাজ ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আপনাকে যেভাবেই হোক কাজটি সম্পন্ন করে দিতে হবে। প্রয়োজনে আপনি ক্লায়েন্টকে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে সময়সীমা বাড়িয়ে নেবেন। অথবা কাজ করতে গিয়ে আপনার কি ধরনের সমস্যা হচ্ছে সেগুলো খুলে বলবেন। কিন্তু কোনোভাবেই কাজের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।

এই গুণগুলো, অভিজ্ঞতার সাথে আসতে পারে যখন আপনি বিভিন্ন প্রকল্পের প্রয়োজনে বিভিন্ন ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করবেন।

নিজে থেকে উদ্যোগী হতে হবে (Initiative)

সাধারনত আমরা যে সমস্ত চাকরি করি, সেখানে আমরা আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপর নির্ভরশীল। কারন এখানে আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যেভাবে আপনাকে বলে দেবে ঠিক সেভাবে আপনাকে কাজ করতে হয়।

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ সম্পূর্ণ আপনার নিজের উপর। আপনি কোন একটি প্রোজেক্ট হাতে নিয়েছেন সেটি সম্পন্ন করা সম্পূর্ণ আপনার দায়িত্ব। ক্লায়েন্ট শুধুমাত্র আপনার কাছ থেকে প্রোজেক্ট বুঝে নেবেন। তাই এখানে আপনাকেই উদ্যোগী হয়ে ক্লায়েন্টের কাছে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন করে বা সাজেশন দিয়ে ক্লায়েন্টের চাহিদা বুঝে নিতে হবে।

এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেখানে একজন ক্লায়েন্ট হয়তো বুঝতে পারে না তার আসলে কি রকম করলে ভালো হবে। আর এই জন্যই তো সে ফ্রিল্যান্সারকে নিয়োগ করেছে।

আপনি যদি ক্লায়েন্টকে সাজেশন দিয়ে কাজটি আরও ভালোভাবে সম্পন্ন করে দেন তাহলে ক্লায়েন্টের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যাবে এবং ওই ক্লায়েন্ট আপনার রিপিটেড ক্লায়েন্ট এ পরিণত হবে।

সফল ফ্রিল্যান্সার হতে হলে নতুন প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে চলতে হবে

ফ্রিল্যান্সাররা যেহেতু টেকনোলজির সাথে এবং অনলাইন ভিত্তিক কাজ করে, সেহেতু প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে চলতে হয়। তাই একজন সফল ফ্রিল্যান্সার সব সময় তার নিজেকে প্রযুক্তির সাথে সাথে আপডেট করে রাখে।

দেখা গেল আজ আপনি যে সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন কাল আরেকজন ক্লায়েন্ট নতুন আরেকটি সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন। তাই সবসময় নিজেকে আপডেট করে রাখা অত্যন্ত জরুরী।

তাছাড়া প্রযুক্তির নিত্যনতুনত্বের কারণে আপনার দক্ষতার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসতে পারে। তাই সব সময় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা চিন্তা করে নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হবে।

শেষ কথা

এতক্ষণ ধৈর্য ধরে এ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এখন উপরের যে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন দেখলেন সেগুলোর সাথে নিজের কোন গুণাবলীটি এখনো বাকি রয়েছে সেটিকে মার্ক করুন। এবং অতিসত্বর এই গুণাবলীগুলো অর্জন করার চেষ্টা করুন।

একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য এই গুণাবলীগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মেনে চলার চেষ্টা করুন। ধৈর্য, একাগ্রতা এবং নিষ্ঠার সাথে লেগে থাকুন অবশ্যই আপনিও একদিন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url