প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে কেনো? উন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ কতটা পিছিয়ে ও কেনো?

অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে, সে তথ্য আমাদের কারোরই অজানা নয়! তবে সত্যি বলতে বিগত দশ বছরে বাংলাদেশ প্রযুক্তির দিক থেকে আগের বছর গুলোর তুলনায় অভাবনীয় ভাবে অনেকাংশেই এগিয়ে গিয়েছে। 

প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে কেনো উন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ কতটা পিছিয়ে ও কেনো

কিন্তু যখনই আপনি বহির্বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোর সাথে বাংলাদেশের তুলনা করতে যাবেন তখন দেখতে পাবেন পিছিয়ে পরার হার অনেক বেশি। আমরা যতই স্লোগান দিতে থাকি না কেনো ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে, আসলে ও কি প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ পরিপূর্ণ ভাবে ডিজিটাল হতে পেরেছে?

৮০ শতাংশ মানুষেরই উত্তর হবে 'না' পারে নি। এর কারন যদি খুঁজতে যাই তাহলে অনেক কারন পাওয়া যাবে। এর জন্য এক যোগে সরকার এবং জনগন উভয়ই দায়ী। গুগলে সার্চ করলেও বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ৫০ টির বেশি সাইট খুজে পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

কিংবা আপনার কাছেও যদি জানতে চাওয়া হয় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কিছু সাইট সম্পর্কে, খুব বেশি কিছু বলতে পারবেন বলে মনে হয় না। এই দোষ কিন্তু আপনার নয়, আমাদের দেশের সমাজ ব্যবস্থাই এমন ভাবে তৈরী হয়ে গিয়েছে যে আমরা কেবল সাধারণ ভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করেই খুশি থাকছি।

নতুন কিছু তৈরী করার কিংবা নিজেদের দেশের জন্য নতুন প্রযুক্তি গঠনের কোনো চেষ্টাই করছি না। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের খুব বেশি প্রযুক্তিবিদ তৈরী হচ্ছে না। আবার যে কয়েক জন হচ্ছে তারা চলে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করতে, যেমনঃ ফেসবুক, নাসা, গুগল, ইউটিউব ইত্যাদি বিখ্যাত বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের হায়ার করে নিচ্ছে।

একবার ভাবুন বাংলাদেশে যদি এরকম খ্যাতনামা কোনো কোম্পানি থাকতো,  তাহলে আমাদের দেশরত্ন দের দেশের বাহিরে যেতে হতো না। তারা দেশের প্রযুক্তি তে বিশাল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারতো। কিন্তু আমাদের দেশে মেধার মূল্য দেওয়া হচ্ছে না বললেই চলে।

আমরা যদি ভালো ভাবে খেয়াল করি তাহলে দেখতে পাবো উন্নত দেশ এর তুলনায় প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ 

অন্তত দশ থেকে পনেরো বছরের মতো পিছিয়ে রয়েছে। অর্থাৎ উন্নত দেশ গুলো প্রযুক্তির দিক থেকে এখনকার সময়ে ঠিক যেই অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশের ঠিক সেই একই অবস্থানে যেতে আরো দশ থেকে পনেরো বছর সময় লাগতে পারে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি, নেটওয়ার্ক সল্পতা, ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য, সঠিক শিক্ষার অভার, সরকারের সঠিক নজর না দেওয়ার ফলেই মূলত প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অনেকাংশে পিছিয়ে।

আমাদের দেশের সরকার এবং রাজনীতিবিদ রা চেষ্টা করলেই প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন আনতে। কিন্তু তবুও এমন টা তারা করছেন না, কারন খুজতে গেলে দেখা যাবে তার একমাত্র কারন হলো রাজনীতি। 

আর যারা আম জনতা রয়েছে অর্থাৎ সাধারণ জনগন তারা তো সকলেই হুজুগে বিশ্বাসী। সবাই যা করছে কোনো ধরনের চিন্তা ভাবনা না করেই সেই দিকেই যাচ্ছে, নিজের বুদ্ধি কাজে লাগাচ্ছে না। প্রযুক্তি, নেটওয়ার্কিং বলতে কেবল ফেসবুক, ইমু, ভাইবার এসবই বোঝে। 

বিভিন্ন শিক্ষামূলক সাইট ও যে রয়েছে তা সম্পর্কে অনেকেই অজ্ঞ। আর সেজন্যই নতুন কিছু উদ্ভাবনের পথ কোনো ভাবেই সুগম হচ্ছে না। তাছাড়াও আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা মোটেও প্রযুক্তিবান্ধব নয়। তাহলে কীভাবে প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে?

স্কুল, কলেজে, ইউনিভার্সিটি তে ও কম্পিউটার শিক্ষার নামে কেবল মাত্র পাঠ্য বইয়ের কিছু পৃষ্ঠাই মুখস্থ করানো হয়। যেখানে অন্য দেশ গুলো তে প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি প্র্যাক্টিকেল ভাবে প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষা সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া হয়।

আর সেখানে বাংলাদেশে কেবল কিছু পুথিগত বিদ্যার মাধ্যমেই এই সকল শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে চলতে থাকলে কখনই প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অন্যান্য উন্নত দেশ গুলোর বরাবর হতে পারবে না।

তবে আমরা আশবাদী এখন থেকে আরও দশ থেকে পনেরো বছর পরে হলেও আমাদের দেশেও ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, অ্যামাজন কিংবা পেপাল এই সকল প্রকারের ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানী গুলো তৈরী হবে।

তবে সেক্ষেত্রে সরকার এবং সাধারণ জনগনের একযোগে কাজ করা একান্ত প্রয়োজন, তাহলে দেখা যাবে নির্দিষ্ট সময়ের আরও অনেক আগেই প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অন্যন্য উন্নত দেশের বরাবর অবস্থান করছে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url