ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে অনলাইন ইনকামের সেরা উপায়

বর্তমান সময়টি হচ্ছে একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক আধুনিক যুগ। আধুনিকতার এই যুগে মানুষ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে ঘরে বসেই একটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই ইন্টারনেটের সাহায্যে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছে। বলা যায় ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ইনকামের একটি অন্যতম মাধ্যম। মোবাইল, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করে যে কেউ ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে অনলাইন থেকে ভালো ইনকাম করতে পারবে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি

বিশেষ করে আমাদের দেশের অনেক বেকার যুবক ও স্টুডেন্টরা এই কাজ শিখে তাদের পড়াশোনার খরচ বহন করতে পারবে। আধুনিকতার এই যুগে কোন ব্যবসায়ী বা কোন কোম্পানি তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে থাকে এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে তারা অনেক টাকা ইনকাম করে লাভবান হচ্ছে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি, ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা ও অসুবিধা, ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে কিভাবে এবং কোন কোন উপায়ে ইনকাম করা যায়, এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে আরো কোন কোন বিষয় জড়িত সে ব্যাপারে আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা বিস্তারিত জানবো।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং কি এটা সহজ ভাষায় বলতে গেলে বলা যায়, সোশ্যাল মিডিয়া অর্থাৎ সকল প্রকার যোগাযোগ মাধ্যমের একটি আধুনিক প্রযুক্তি যেখানে ইন্টারনেটের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে অনলাইনে পণ্য বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। এখন সেটা হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর মাধ্যমে, হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে আবার হতে পারে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে। 

এক কথায় যে মার্কেটিং প্রচারণায় ডিজিটাল যোগাযোগ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেটি হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতে ভিডিও দেখার সময়, নাটক দেখার সময়, মোবাইলে গেমস খেলার সময় যে বিজ্ঞাপন গুলো দেখে থাকি তার সবই ডিজিটাল মার্কেটিং।

ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার

যদিও ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক গুলো প্রকার বা ধাপ রয়েছে। কিন্ত বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় কয়েকটি ধাপ নিচে তুলে ধরা হল। এর যে কোন একটি বিষয় নিয়ে কাজ করে আপনি স্বাবলম্বী হতে পারবেন। 

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)

সহজ ভাষায় বলতে গেলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হলো এমন একটি পদ্ধতি  বা মার্কেটিং টুলস যেটি ব্যবহার করে যে কেউ তার ওয়েবসাইটকে গুগলের ফার্স্ট পেজে নিয়ে আসতে পারবে। এসইও বলতে আমরা সবাই গুগলকে চিনি বা গুগলকে বুঝি। 

গুগলের মধ্য কোন একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে নিয়ে আসা বা টপ পজিশনে নিয়ে আসা অথবা সার্চ ভিসিবিলিটি বাড়ানোর কাজটাই হচ্ছে এসইও। 

সাধারণত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ

  • অন পেজ এসইও
  • অফ পেজ এসইও

অন পেজ এসইওঃ 

অন পেজ এসইও হলো কোন সার্চ ইঞ্জিন কে টার্গেট করে একটি ওয়েবসাইটের ভেতরের কোন ওয়েবপেজকে অপটিমাইজেশন করা।

অফ পেজ এসইওঃ

অফ পেজ এসইও হলো কোন সার্চ ইঞ্জিন কে টার্গেট করে একটি ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজেশন করা। তবে এক্ষেত্রে একটা ওয়েবসাইটের সম্পূর্ণ বাইরের কাজ করা হয়। 

এই মাধ্যমে অফ পেজ এসইও করার জন্য, আপনার সম্পূর্ণভাবে ওয়েবসাইটের বাইরে গিয়ে কিছু এসইও টেকনিক ব্যবহার করতে হবে।

কন্টেন্ট মার্কেটিং 

আসুন আমরা কনটেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে জানি। যখনই আমরা কনটেন্ট মার্কেটিং শব্দটা শুনছি তখন কিন্তু দুটি ওয়ার্ড আমাদের মাথায় আসছে। একটা হচ্ছে কন্টেন্ট আরেকটা হচ্ছে মার্কেটিং। কন্টেন্ট বলতে আমরা কি বুঝি চলুন আগে সেটি সম্পর্কে জেনে নেই। 

কনটেন্ট বলতে আমরা মেইনলি সেটিই বুঝি যেখান থেকে আমরা কোন ইনফরমেশন পাই। এখন ইনফরমেশন এর মাধ্যম গুলো কি কি হতে পারে। এটা হতে পারে ছবি, হতে পারে যে কোন লেখা বা হতে পারে যে কোন ভিডিও কিংবা অডিও। এই সবকিছু মিলেই কিন্তু কন্টেন্ট। 

যেখান থেকে আমরা ইনফরমেশন পাচ্ছি সেই সবকিছুই কন্টেন্ট। আর এই কন্টেন্ট গুলোকে যখন মার্কেটিং করা হয়, সেটিই হচ্ছে কনটেন্ট মার্কেটিং। 

কয়েকটি জনপ্রিয় কন্টেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে চলুন জেনে নিই।

  • লেখা কনটেন্ট মার্কেটিং
  • ছবি কন্টেন্ট মার্কেটিং
  • ভিডিও কন্টেন্ট মার্কেটিং

লেখা কন্টেন্ট মার্কেটিংঃ

কন্টেন্ট মার্কেটিং এ Text বা Article অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একজন রাইটার বিভিন্ন বিষয়ের উপর তথ্যবহুল আর্টিকেল লিখে থাকেন। হতে পারে সেই লেখাগুলো একজন  ভিজিটরের বিজনেস আইডিয়া। একজন রাইটার তার লেখাগুলো বিভিন্ন ব্লগ সাইটে পোস্ট করে থাকেন এবং সেখান থেকে ওয়েবসাইটের ভিজিটররা এই আর্টিকেল পড়ে বিভিন্ন তথ্য পেয়ে থাকেন।

ছবি কন্টেন্ট মার্কেটিংঃ 

একটা ছবির মাধ্যমে আমরা আমাদের কন্টেন্ট এর পুরো বিষয়টি তুলে ধরতে পারি। যেমন আমরা আমাদের একটা ব্লগ পোস্ট কে টার্গেট করে সেই ব্লগ পোস্ট সম্পর্কে কি বোঝাতে চাচ্ছি, সেটা একটা থাম্বনেইল বা ছবির মধ্যে ডিজাইন করে অর্ডিয়েন্সকে বোঝাতে পারি। 

তেমনিভাবে কোন বিজনেস কে প্রমোট করার জন্য সে বিজনেস এর সমস্ত বিবরণ ও তথ্য দিয়ে একটা ছবি বা থাম্বনেইল তৈরি করে সেই ছবিটাকে মার্কেটিং করা যেতে পারে।

ভিডিও কন্টেন্ট মার্কেটিংঃ

বর্তমান সময়ে কন্টেন্ট মার্কেটিং এর দিক থেকে ভিডিও কন্টেন্ট মার্কেটিং খুবই জনপ্রিয়। কারণ ভিডিও কন্টেন্ট এর মাধ্যমে গ্রাহকদের চাহিদাগুলো খুব ভালো মতো তুলে ধরা যায়। যেমন কোন প্রোডাক্টের মান কেমন গুণাবলী সম্পন্ন বা কোন প্রোডাক্ট কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি হয়েছে, সেটি ভিডিও কন্টেন্ট এর মাধ্যমে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে একজন গ্রাহকের মন খুব সহজেই জয় করা যায়। আপনি চাইলে ভিডিও কন্টেন্ট এর মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্টের প্রমোশন করাতে পারেন। এভাবে যে কোন ব্যবসা বা পণ্যের প্রচার করাটা অধিক লাভজনক হয়ে থাকে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

আমরা অনেকগুলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকি। যেমনঃ ফেইসবুক, ইউটিউব, টুইটার,  ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন ইত্যাদি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ব্যক্তি বর্গের সাথে যোগাযোগ করতে পারি। 

এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলোকে ব্যবহার করে কোন পণ্য বা ব্যবসায়ের মার্কেটিং ক্যাম্পেইন পরিচালনা করাই হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। তাহলে চলুন এক নজরে দেখে নেই জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং গুলো কি কি হতে পারে।

  • ফেসবুক 
  • ইউটিউব 
  • ইনস্ট্রাগ্রাম  
  • টুইটার 
  • লিঙ্কডইন
  • পিন্টারেস্ট
  • স্কাইপ

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে অনলাইন থেকে ইনকামের সেরা ও অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। কোন একটি কোম্পানির প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস প্রমোট বা সেল করে দেয়ার মাধ্যমে প্রোমোটার ব্যক্তি যে কমিশন বা অর্থ পায় সেটি হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এই মার্কেটিং এর ভালো দিক হলো ব্র্যান্ড ও প্রোমোটার দুজনেই এর থেকে ভালো লাভবান হয়।

সিপিএ মার্কেটিং

সিপিএ মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের শুরুতেই জানতে হবে সিপিএ এর পূর্ণরূপ কি। সিপিএ এর পূর্ণরূপ হলো (Cost Per Action)। 

সিপিএ মার্কেটিং এ একাউন্ট করার পরে সে একাউন্ট থেকে সিপিএ মার্কেটিং এর কিছু লিংক বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রমোট করার ফলে সেই ওয়েবসাইট থেকে যদি কোন ভিজিটর ওই লিংকে ক্লিক করে কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করে, তাহলে এখান থেকে ওই সিপিএ লিংকের মালিক একটা কমিশন পায়। এটিই হচ্ছে সিপিএ মার্কেটিং।

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটা প্রক্রিয়া বা একটা প্রসেস যেখানে কোম্পানি তার নির্দিষ্ট গোলে পৌঁছানোর জন্য একটা স্পেসিফিক টার্গেটেড অর্ডিয়েন্সের ইমেইল কালেক্ট করে এবং তাদেরকে বিভিন্ন রকমের প্রোমোশনাল ইমেইল সেন্ড করে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভাষায় আরো সহজ ভাবে বলা যায় যে, আপনার কাস্টমার যারা আছে বা আপনার ব্যবসায়ের পণ্য কিনতে যারা আগ্রহী এমন সব মানুষের ইমেইলে আপনার ব্যবসায়ের পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য বা অফার পাঠানো। এভাবে আপনি ইমেইলের মাধ্যমে মানুষের কাছে আপনার ব্যবসা বা পণ্যের মার্কেটিং করলেন। এটিই হচ্ছে ইমেইল মার্কেটিং।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং কি সেটি সম্পর্কে জানতে হলে সবার আগে আমাদেরকে জানতে হবে ইনফ্লুয়েন্সার এর আভিধানিক অর্থ কি। ইনফ্লুয়েন্সার এর বাংলা আভিধানিক অর্থ হচ্ছে প্রভাষক। 

সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোন জনপ্রিয় ব্যক্তির দ্বারা কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, পেজে বা বিভিন্ন টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করে থাকে, তখন তাকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং বলে।

পে-পার-ক্লিক মার্কেটিং

পে-পার- ক্লিক কে সংক্ষেপে পিপিসি বলা হয়। পে-পার ক্লিক এক ধরনের বিজ্ঞাপন যা অনলাইন মার্কেটিং এর একটি পদ্ধতি এবং এ সব বিজ্ঞাপনে একজন দর্শক ক্লিক করলেই বিজ্ঞাপন দাতা কমিশন পান।

মার্কেটিং অটোমেশন

মার্কেটিং অটোমেশন হল এমন প্রযুক্তি যা মার্কেটিং প্রক্রিয়া এবং বহুমুখী প্রচারাভিযান পরিচালনা করে, একাধিক চ্যানেল জুড়ে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে। মার্কেটিং অটোমেশনের মাধ্যমে ব্যবসাগুলি ইমেল, ওয়েব, সামাজিক এবং পাঠ্য জুড়ে স্বয়ংক্রিয় বার্তাগুলির মাধ্যমে গ্রাহকদের লক্ষ্য করতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ

ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য আমরা যে মাধ্যম গুলোকে ব্যবহার করছি সেগুলোর ফিউচার যদি আমরা আইডেন্টিফাই করতে পারি। তাহলেই বুঝতে পারবো ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্যারিয়ার কতটুকু বা এটার ভবিষ্যৎ কেমন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য আমরা যে প্ল্যাটফর্ম গুলো ব্যবহার করি সেগুলো হলো গুগল, ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রাম ইত্যাদি। এখন এই প্লাটফর্ম গুলোতে ইউজার কেমন সেগুলো সম্পর্কে আগে আমাদের জানতে হবে। 

ফেসবুকের বর্তমান মান্থলি একটিভ ইউজার হলো ২.৯ বিলিয়ন, একইভাবে ইনস্টাগ্রামের মান্থলি একটিভ ইউজার হলো ২ বিলিয়ন, তেমনি ভাবে গুগলের মান্থলি একটিভ ইউজার হল ২.৬ বিলিয়ন। তাহলে বোঝা গেল যেখানে ইউজার বেশি এবং যে প্ল্যাটফর্ম গুলো ভেরিফাইড অথবা যে প্লাটফর্ম গুলো সব সময় একটিভ থাকবে সে প্লাটফর্ম গুলো নিয়ে কাজ করলে আমাদের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল ও আলোকিত হবে।

এসব কারণেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এবং আগামী বছরগুলোতে এর চাহিদা বাড়তেই থাকবে বলে আশা করা যায়। একজন দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার ফাইবার, আপওয়ার্কের মতো বড় বড় মার্কেটপ্লেস থেকে এবং মার্কেটপ্লেসের বাইরে থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে লক্ষ লক্ষ ডলার ইনকাম করে যাচ্ছে। 

বাংলাদেশের কয়েকটি জনপ্রিয় নিউজ চ্যানেলে রিপোর্ট করা হয় যে, আগামী কয়েক দশকের মধ্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা  দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। আর তখন এই খাতে অনেক  লোকের বা বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।   

 ডিজিটাল মার্কেটিং এর কারণে একজন উদ্যোক্তা আরো বেশি উৎপাদনশীল হয়ে উঠবে এবং সে মার্কেটিং এর বিভিন্ন কলাকৌশল গুলো ব্যবহার করার ফলে তার ব্যবসাকে আরো সমৃদ্ধশালী করে তুলতে পারবে, প্রথাগত মার্কেটিং এর তুলনায় কয়েকগুন বেশি। যার কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং জানা অবশ্যই প্রয়োজন।

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে হলে কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের প্রয়োজন। একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার হতে হলে আপনাকে অনলাইন ভিত্তিক সকল কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আর এটি আহামরি কঠিন কোন কাজ নয়। আমরা বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকি। এই সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে যদি আমরা জানতে পারি, তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় টা আমাদের জন্য অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। 

অনলাইনে ফ্রিতে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার অনেকগুলো রিসোর্স রয়েছে। প্রথমদিকে শুরুতে কিভাবে  ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা যায় সে সবকিছু সম্পর্কে আমরা আজকে আলোচনা করব।

ফেসবুকে অনেকগুলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর গ্রুপ রয়েছে সেই গ্রুপে আপনি যুক্ত হয়ে নিয়মিত তাদের পোস্টগুলো ফলো করতে পারেন। অনেকেই তাদের মার্কেটিং এর বিভিন্ন টিপস ও ট্রিকস সম্পর্কে গ্রুপে পোস্ট করেন, আবার অনেকেই মার্কেটিং সম্পর্কে জানার জন্য গ্রুপে পোস্ট করেন। এভাবেই ফেসবুকের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় সম্পর্কে জানতে পারেন।

গুগলের সার্চ ইঞ্জিনকে কাজে লাগিয়ে গুগলের  মাধ্যমে অনেক রিসার্চ করে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপায় সম্পর্কে অনেক তথ্য জেনে নিতে পারেন। 

বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় সম্পর্কে ব্লক পোস্ট করেন। আপনারা চাইলে সেই  ব্লগ পোস্ট গুলো নিয়মিত পড়ে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় সম্পর্কে জানতে পারেন। 

ইউটিউবে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় লিখে সার্চ করলে হাজার হাজার ভিডিও টিউটোরিয়াল পাবেন। এখান থেকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে সে টিউটোরিয়াল গুলো দেখে ডিজিটাল  মার্কেটিং শেখার উপায় সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন। 

ডিজিটাল মার্কেটিং রিলেটেড ফেসবুকের অনেক গ্রুপ রয়েছে যেখানে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার অনেক কোর্স ফ্রিতে প্রদান করে থাকেন। তাই এ ধরনের ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হয়ে ফ্রী কোর্সগুলো কালেক্ট করতে পারেন। 

উপরে যত আলোচনা করেছি তার সবগুলোই ছিল ফ্রি রিসোর্স। ফ্রি রিসোর্সের মাধ্যমেও যদি আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় সম্পর্কে জানতে না পারেন। তাহলে অনেক আইটি প্রতিষ্ঠান তাদের ইনস্টিটিউটে অনলাইনে এবং অফলাইনে পেইড কোর্স করিয়ে থাকেন। আপনি সেই পেইড কোর্সগুলোতে ভর্তি হয়ে ডিজিটাল  মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং শিখতে পারবেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কয়েকটি জনপ্রিয় আইটি ইন্সটিটিউটের নাম নিচে দেওয়া হল। এদের যেকোনো একটি ইনস্টিটিউট থেকে আপনি কোর্স করতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এ কি কি শেখানো হয়? 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেকগুলো শাখা রয়েছে। তারমধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং এর যে বিষয়বস্তুগুলো রপ্ত করলে একজন পরিপূর্ণ ডিজিটাল মার্কেটিং এ এক্সপার্ট হওয়া যায়, সে বিষয়গুলো একটি পরিপূর্ণ সিলেবাসের মতো করে A টু Z তুলে ধরেছি। যে কেউ এই সিলেবাস ফলো করে কাজ শিখে ভালো একটি ইনকাম জেনারেট করতে পারবে।

  • Search engine optimization (SEO)
  • Social media marketing
  • Content marketing
  • Pay-per-click advertising (PPC)
  • Email marketing
  • Affiliate marketing
  • Video marketing
  • Mobile marketing
  • E-commerce marketing
  • Marketing automation
  • Web analytics
  • Influencer marketing

সেরা ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেক্টর টা অনেক বড় ও বিস্তৃত। তবে একজন মানুষের পক্ষে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সকল কাজ একত্রে শিখে ওটা সম্ভব হয় না। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম করলে সেটা অসম্ভব কিছু নয়। নিচে বর্ণিত জনপ্রিয় কয়েকটি বিষয়ের উপর কোর্স করে কাজ শিখে চাইলে আপনিও ইনকাম শুরু করতে পারেন। 

  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং
  • ভিডিও মার্কেটিং 
  • লোকাল এসইও
  • টেকনিক্যাল এসইও
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  • সিপিএ মার্কেটিং
  • ইমেইল মার্কেটিং
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার 
  • ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং
  • পে-পার-ক্লিক মার্কেটিং
  • মার্কেটিং অটোমেশন
  • মাইক্রো ব্লগিং 
  • চ্যাটবট ব্যবহার

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা

বর্তমানে মার্কেটিং জগতের বেশ বড় একটা অংশ হিসেবে ভূমিকা পালন করছে ডিজিটাল মার্কেটিং। কোন ব্যবসায়ের প্রধান ও অন্যতম উদ্দেশ্য হলো পণ্যের গুণগত মান ও সেবা সম্পর্কে ক্রেতাদের কাছে বিশ্বাস অর্জন করে ব্যবসার প্রসার ঘটানো।

এই ব্যবসা গুলিকে পরিচালনা করতে গুগল সার্চ ইঞ্জিন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেশ জনপ্রিয় সুবিধা গুলো নিচ তুলে ধরা হলো। 

  • প্রথমত কোন ব্যবসায়ী ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে তার ব্যবসাকে ঘরে বসেই পরিচালনা করতে পারে।
  • পণ্যের গুণগত মান ও সেবা সম্পর্কে ঘরে বসেই কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।   
  • মার্কেট রিসার্চ করে পণ্য বিক্রয় করতে পারে। 
  • টার্গেট অডিয়েন্স কে খুঁজে বের করে সে অডিয়েন্সের কাছে প্রোডাক্ট সেল করতে পারে। 
  • অনলাইনে অল্প খরচেই প্রোডাক্টের  মার্কেটিং করতে পারে।
  • স্বল্প ব্যয়ে অনেক বেশি পরিমাণ আয় করতে পারে।  

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে কি কি লাগে

ডিজিটাল মার্কেটিং কি ইতিপূর্বেই সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখন আলোচনা করব ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে হলে কি কি লাগে বা কি কি প্রয়োজন হতে পারে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে হলে আপনাকে শুরুতেই প্রযুক্তি বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা বা কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা থাকতে হবে। লেখালেখি, ছবি সম্পাদনা, গ্রাফিকস সফটওয়্যারের কাজ জানা থাকলে বাড়তি দক্ষতা হিসেবে কাজে আসবে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এসইও সম্পর্কে অবশ্যই ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে আপনার নিম্নোক্ত বিষয়গুলো প্রয়োজন হবে।

দক্ষতাঃ 

ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন হবে দক্ষতার। দক্ষতা ছাড়া এই প্লাটফর্মে সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই এই সেক্টরে আসতে হলে শুরুতে ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে।  

ডিভাইসঃ 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অধিকাংশ কাজই অনলাইনের মাধ্যমে করা হয়। আর অনলাইনের এই কাজগুলো করা একটি ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ছাড়া সম্ভব হয় না। এজন্যই ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে শুরুতে একটি ডিভাইস থাকতে হবে সেটি হচ্ছে ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার। 

মার্কেটিং স্ট্রাটেজিঃ 

মার্কেটিং স্ট্রাটেজি হল ব্যবসায়ের পণ্য বা পরিষেবা সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো এবং সম্ভাব্য গ্রাহকদেরকে স্থায়ী গ্রাহকে পরিণত করার জন্য ব্যবসায়ের সামগ্রিক পরিকল্পনাকে বোঝায়। মার্কেটিং স্ট্রাটেজি এর অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ব্রান্ড রেপুটেশন এবং ব্রান্ড রিকগনিশন বৃদ্ধি করা।

 এসইওঃ 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অন্যতম বৃহৎ অংশ হলো এসইও। এসইও জানা থাকলে অর্গানিকভাবে আপনি আপনার ব্যবসায়ের পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন। আর এর ফলে  ডিজিটাল মার্কেটিং এ সফলতার ধাপে আপনি আরো এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবেন।

 কন্টেন্ট ক্রিয়েশনঃ 

ব্যবসায়ের কোন একটি প্রোডাক্ট সম্পর্কে মার্কেটিং করার জন্য কনটেন্টের প্রয়োজন হয়। আর এই কন্টেন্ট হতে পারে ভিডিও কনটেন্ট, অডিও কনটেন্ট, টেক্সট কন্টেন্ট, ইমেজ কনটেন্ট ইত্যাদি। এই ধরনের কন্টেন্ট  ক্রিয়েশনের গুণাবলী আপনার মধ্যে থাকতে হবে। 

ডাটা এনালাইসিসঃ 

ডাটা এনালাইসিস ডিজিটাল মার্কেটিং এর খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। আপনি যখন কোন প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করবেন। তখন অবশ্যই আপনার টার্গেট করা কাস্টমারদের ডাটা গুলো এনালাইসিস করতে হবে। আর এজন্যই ডাটা এনালাইসিস করার মতো অভিজ্ঞতা নিজের মধ্যে থাকতে হবে।  

ডিজাইনিং নলেজঃ 

অনলাইনে একজন কাস্টমার তখনই একটি বিজ্ঞাপন দেখে প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হয়। যখন ওই বিজ্ঞাপনটি একজন কাস্টমারের ভালো লাগে। বিজ্ঞাপনে ব্যানার ইমেজ ব্যবহার করা হয়। এজন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এ গ্রাফিক ডিজাইন সম্পর্কে ভালো ডিজাইন আইডিয়া থাকতে হবে। 

ধৈর্যঃ 

সচরাচর প্রত্যেকটি কাজে অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এ ধৈর্যের প্রয়োজন হয় আরো বেশি। কারন এই সেক্টরটি  অনেক বৃহৎ। তাই আপনার মধ্য যখন প্রচুর ধৈর্য ধরার মানসিকতা তৈরি হবে তখনই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর সফলতার চূড়ায় পৌঁছে যেতে পারবেন।

পরিশেষে

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে ইনকামের সেরা উপায় গুলি সম্পর্কে আসলে অল্প পরিসরে লেখা সম্ভব হয় না। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ একটি গাইডলাইন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের এই গাইডলাইন গুলো স্টেপ বাই স্টেপ ফলো করতে পারলে আমরা আশা করি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আপনার আর কোন প্রশ্ন বা কনফিউশন থাকবে না। এই গাইডলাইন গুলো ফলো করে এখন আপনিও অন্যদের মতো একটা হ্যান্ডসাম সেলারি ইনকাম করতে পারবেন

Next Post
No Comment
Add Comment
comment url